ইউটিউবে Shorts ভিডিও বানিয়ে মাসে 100 ডলার থেকে 10 হাজার ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা যাবে এরকম একটা অ্যানাউন্সমেন্ট ইউটিউব এর পক্ষ থেকে এসেছে।
এটা হচ্ছে ইউটিউব এর একটা রিওয়ার্ড ফান্ড। এই ফান্ড থেকে যারা শর্টস্ ভিডিও বানায় তাদের কে বড় অংকের অ্যামাউন্ট দেওয়া হবে। এই নিউজটা আসার পরে আমাদের দেশে অনেকেই এটা নিয়ে এক্সাইটেড। এবং এটা নিয়ে কিছু ভুল ধারনা মার্কেটে ছড়াচ্ছে। আজকের টিউটোরিয়ালে একদমই ক্লিয়ার করে দেবো।
ভিডিও কিভাবে তৈরি করতে হয়, বাংলাদেশ থেকে কি শর্ট ভিডিও তৈরি করা যায় কিনা এবং ইউটিউব ঘোষণা করেছে কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের কে 100 মিলিয়ন ইউএস ডলার তারা রিওয়ার্ড হিসেবে দেবে এবং প্রত্যেকে 10 থেকে 10 হাজার ডলার পর্যন্ত প্রতি মাসে পেতে পারে এই শর্ট ভিডিও বানিয়ে। আজকের টিউটোরিয়ালে শর্ট ভিডিও সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
আরো পড়ুন!
ইউটিউবে Shorts ভিডিও কি?
আপনারা যদি মোবাইলে যে ইউটিউব অ্যাপ আছে তার মাধ্যমে ইউটিউবে ঢুকেন তাহলে দেখবেন যে এক মিনিটের নিচে কিছু ভিডিও আপনার এখানে আসে যেরকমটা আগে ইউটিউবে যে ডেইলি স্টরি ছির তাতে আসতো জাস্ট নিজের মতো করে এই
ভিডিও গুলো কে বলা হয় শর্ট ভিডিও। অর্থাৎ টিকটক, লাইকি কিংবা স্ন্যাক অ্যাপ গুলোতে যেমন বিডিও আছে সেই একই রকম ভিডিও হয় সেই স্টাইলের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করা যায় সেটাকে বলা হয় ইউটিউব শর্টস ভিডিও।
ভিডিওর রেজুলেশন বা সাইজঃ
আপনি চাইলে বাংলাদেশ থেকে ও আপলোড করতে পারবেন সে জন্য আপনার ভিডিওটা মোবাইলের রেজুলেশনে হতে হবে। অর্থাৎ ভার্টিক্যাল রেজুলেশনে হবে। আর ডিউরেশন 59 সেকেন্ড বা তার নিচে যদি হয় তাহলে সেটা শর্টস্ ভিডিওর জন্য যোগ্য হবে।
আর আপনি সরাসরি আপলোড করার সময় শুধুমাত্র #shorts বা ডেসক্রিপশনে #Shorts যদি লিখে দেন, আর আমরা হোম পেইজে যেরকম প্লেলিস্ট এড করি, রিসেন্ট আপলোড তারপরে পপুলার আপলোড, সেই রকম করে হোম পেজে Shorts নামের এরকম একটা ট্যাব এড করে দিবেন, তাহলে আপনার চ্যানেলে যদি আপনি এরকম ভার্টিকেল মোবাইল রেজুলেশনে এক মিনিটের নিচে ভিডিও আপলোড করেন তাহলে এটা অটোমেটিক্যালি শর্ট ভিডিও এর আওতায় চলে যাবে।
এই হচ্ছে মোটামুটি শর্টস্ ভিডিওর ধারণা।
Shorts Video এর মাধ্যমে ১০০ থেকে ১০ হাজার ডলার ইনকামঃ
ইউটিউব সামপ্রতিক যে আপডেট এনেছে সেখানে তারা বলেছে শর্ট ভিডিও যারা তৈরি করবে তাদের জন্য তারা মাসে 100 ডলার থেকে 10 হাজার ডলার পর্যন্ত দেবে যদি ও সেই চ্যানেল মনিটাইজেশন এর আওতায় নাও থাকে তারপরেও এই রিওয়ার্ড তারা দেবে এবং টোটাল 100 মিলিয়ন ইউএস ডলার ঘোষণা করেছে এ রিওয়ার্ড হিসেবে।
এই সব কিছুই ইউটিউব ঘোষণা করেছে তারা টিকটক, লাইকি অ্যাপ গুলোর সাথে কম্পিটিশন করার জন্য যেহেতু টিকটক লাইকি এই অ্যাপ গুলোতে এতো টাকা নাই, তবে আছে তুলনামূলক কম তাই ইউটিউব চাচ্ছে সেই দর্শক যারা টিকটক, লাইকি অ্যাপে ভিডিও বানায় তারা যেন এখন থেকে ইউটিউবে এসে ভিডিও বানায়।
Shorts ভিডিও বানানোর জন্য যে সব শর্ত বা রিকুয়ার্মেন্ট লাগবেঃ
১/ ইউটিউবে 180 দিনের মধ্যে একটি এলিজিবল ভিডিও আপনার চ্যানেলে থাকতে হবে। এলিজিবল বলতে বোঝাচ্ছে, আপনার সেই ভিডিওটা অরিজিনাল হতে হবে , অন্য কারোর ভিডিও হলে চলবে না এবং সেই ভিডিওতে অন্য কোন অ্যাপ এর লগো থাকা যাবে না, মানে টিকটক থেকে ডাউনলোড করে আপনি ইউটিউবে দিয়ে দিবেন তাহলে হবে না।
২/ এবং সেই ভিডিওটি কপিরাইট ফ্রি হইতে হবে কমিউনিটি গাইডলাইন ফ্রি হইতে হবে।
৩/ ইউটিউবে অন্যান্য যে নিয়ম কানুন গুলো আছে সেগুলো মেনে সেই ভিডিওটা আপনার আপলোড করতে হবে।
যেসব দেশে এই রিওয়ার্ড গুলো দেওয়া হবেঃ
ইউটিউব কিছু দেশ সিলেক্ট করে দিয়েছে শুধুমাত্র সেই দেশগুলো থেকেই যারা ভিডিও বানাবে তাদেরকে এই রিওয়ার্ড দেওয়া হবে। এবং সেই দেশের লিস্টে বাংলাদেশে নাই। অনেকেই একটি ভুল ধারণা দিচ্ছে যে বাংলাদেশ থেকেও এই রিওয়ার্ড পাওয়া যাবে। এটা আসলে ভুল। কান্ট্রি লিস্ট টা আমি দিয়ে দিচ্ছি এটা ইউটিউবে পেজ থেকে কালেক্ট করা আপনারা দেখে নিতে পারেন।
তবে যদিও ইউটিউব বলছে যে তারা আরো কযেকটি দেশ যুক্ত করবে। সেই দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কে যুক্ত করবে কিনা এটা কিন্তু এখন পর্যন্ত শিওর না। যুক্ত হলে অবশ্যই খুবই ভালো হতো।
আমরা যে দেশগুলো দেখছি এগুলো দেখে বুঝতেই পারছি মানে যেই যেই দেশে এইরকম third-party অ্যাপ টিকটক, লাইকি অ্যাপ গুলো বেশি ইউজ হয় সেই দেশ গুলোকে তারা টার্গেট করেই কিন্তু এই শর্টস্ রিওয়ার্ডের আওতায় এনেছে।আর যদি আপনি ওইরকম কোন দেশে বাস করেন তাহলে আপনি ভিডিও বানাতে পারেন।
টাকা কিভাবে পাবেন?
শর্টস্ ভিডিও বানানোর পরে রেগুলার এডসেন্স যেটা আছে সেটার মাধ্যমে আপনি টাকা পাবেন। আপনি প্রতিমাসে শর্টস্ ভিডিও আপলোড করবেন আর মাস শেষে ইউটিউব আপনাকে একটা মেইল দেবে, মেইল দিয়ে জানাবে যে আপনার চ্যানেল টি শর্টসের রিওয়ার্ডের জন্য এলিজিবল কিনা বা আপনি শর্টস্ রিওয়ার্ড পাচ্ছেন কিনা।
আপনি যদি পান তাহলে সেখানে ক্লেইম রিওয়ার্ডের একটা অপশন থাকবে সেখানে ক্লিক করলেই
আপনার চ্যানেল থেকে অ্যাডসেন্সে টাকা ট্রান্সফার হয়ে যাবে। যদি আপনার এডসেন্স একাউন্ট এড করা থাকে চ্যানেলে তাহলে ভালো আর যদি না থাকে তাহলে নতুন এডসেন্স এড করতে হবে।
এটাই হচ্ছে ইউটিউবের শর্টস্ ভিডিওর সম্পূর্ণ প্রসেস।
শেষ কথা!
শর্টস্ ভিডিও সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তারপর ও আপনাদের যদি আরো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।
সবাই ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ
Leave a Reply