কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা। সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা।

 

কিসমিস কেন খাবেন কিসমিস খাওয়ার উপকারীতা

আমরা প্রায়ই সবাই জানি, সাধারণত শুকনা আঙ্গুরকেই কিসমিস বলা হয়। বিশ্বের প্রায় প্রতিটা  দেশেই কিসমিস উৎপাদিত করা হয়।  যা  শক্তি বর্ধক ও ক্যালরির উৎস হিসেবে খুব ভালো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কেননা এটি যখন ইচ্ছা সরাসরি খেতে পারবেন এবং ফল হিসাবে ও দৈনন্দিন খেতে পারবেন । আজকে আমরা জানবো কিসমিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

কিসমিস কেন খাবেন কিসমিস খাওয়ার উপকারীতা

আপনারা কি জানেন?  কিসমিস কে কি বলা হয়?আসলে  কিসমিস কে বলা হয় শুকনো ফলের রাজা।  কিসমিস ইরাক, ইরান, পাকিস্তান ও ভারতে  খুব বেশি  জন্মে থাকে। আমাদের  রান্না করা খাবারের  স্বাদ দ্বিগুন করার জন্যে এবং খাবার পরিবেশনের করার সময় এছাড়া  অনেক সময় কিসমিস ব্যবহার  করে থাকি। আপনারা কি জানেন কিভাবে কিসমিস তৈরি করা হয়?  সাধারণত  আঙ্গুরকে শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয়। কিসমিস তৈরি করতে প্রয়োজন হয়  সূর্যের তাপ কিংবা মাইক্রোওয়েভ ওভেন। আঙ্গুরের ফ্রুকটোজগুলো তাপে গরম হয়ে জমাট বেঁধে কিসমিসে পরিণত হয়।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কিসমিস কিভাবে এবং কেন খাবো এবং কিসমিস  খাওয়ার উপকারিতা কি কি???  

আরো পড়ুন!

কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

দ্রুত ওজন বাড়ানোর ১০ টি ঘরোয়া উপায়২০২৩

চুল পড়ার কারণগুলো  এবং তার আধুনিক চিকিৎসা 

কিসমিসের কেন খাবেন? 

১ ।  বাঙ্গালি মানেই খুবই খাদ্য রসিক মানুষ।  তারা খাবার কে নানাভাবে সাজিয়ে খেতে খুব ভালোবাসে । আমরা মিষ্টি খাবার হিসাবে  পায়েস,পোলাও,কোরমা,জরদ্দা ইত্যাদি  রান্না করে থাকি,  এবং তা  বিভিন্ন ভাবে পরিবেশন করি। এতে করে  যদি  খাবারের উপর কয়েকটি ছড়িয়ে  কিসমিস দেয়া হয় তাহলে দেখতে যেমন সুন্দর হবে আবার  স্বাদ টা আরো দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এই যে ছোট শুকনো ফল যে  আপনাকে শুধু মাত্র স্বাদ দিবে তা নয়,  বরং আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারীও করবে।

২। অনেক মহিলা আছে যাদের রক্তস্বল্পতার সমস্যা রয়েছে এবং তারা যদি চান তাহলে কিসমিস ভিজিয়ে পানি খেতে পারেন। কারন  কিসমিসে আছে  কার্বোহাইড্রেট। তাই ডাক্তারেরা কিসমিস ভেজানো পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ।  এতে আমাদের  লিভার ও কিডনির সমস্যা  সহজেই  দূর  হয়ে যাবে ।

৩।  ভেজানো কিসমিসের পানিতে  আরো  অনেক উপকারীতে আছে । যাদের বদ হজম ও পেটের সমস্যা আছে,  তারা এই কিসমিস ভেজানো পানি খেতে পারে। এর পানি খেলে এই  সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে  ।তাছাড়া   ভেজানো কিসমিসে আছে  পটাশিয়াম, যা  আমাদের  হার্ট কে ভালো রাখে এবং  কোলেস্টেরল এর সমস্যা থেকে খুব সহজে  দূর করে ।

৪।  আমরা প্রায়  অনেকেই আছি  যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে ডায়েট করে থাকি । তারা  সাধারণত বিকালের নাস্তায় ড্রাই ফ্রুটস খেয়ে থাকে । এতে অন্যান্য ড্রাই ফ্রুটস এর সাথে যদি  কিসমিস   থাকে তবে কিন্তু খারাপ হয় না। কিসমিসে আছে  পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ফ্রুক্টোজ ইত্যাদি। 

৫। কিসমিসের ওজন অনুযায়ী আরো কিছু নির্দিষ্ট খাদ্য উপাদান আছে,  যেমন,  এর মধ্যে সবথেকে বেশি  হলো ফ্রুক্টোজ। তাই কিসমিস আমাদের নিয়মিত খাদ্য তালিকায় প্রতিদিনই  রাখা প্রয়োজন।

৬।  কিসমিস আসলে বিশেষ করে মহিলাদের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ মহিলাদের বিশেষ কিছু খাদ্য উপাদানের ঘাটতি থাকে আয়রন, রক্তস্বল্পতা। এই কিসমিসের ভেজানো পানি  তাই নিয়মিত খেলে আমাদের রক্তসঞ্চালনের যেসকল সমস্যা থাকতে পারে,  যেমন পেশি সংকুচিত হয়ে যাওয়া  এবং সেই সাথে  সকল সমস্যার  সমাধান পাওয়া যায়।

৭। শুধু খাবারের সৌন্দর্য রক্ষার্থে কিসমিস খাওয়া না। আমাদের প্রতিদিনের  পুষ্টি গুণের ঘাটতিতে  ও  কিসমিসের ভূমিকা অনেক। ফ্রাইড রাইসে সামান্য কিসমিস দিলেও একটা আলাদা স্বাদ আনে । এছাড়া যারা শুধু মাত্র  কিসমিস খেতে পারেন না তারা  যদি চান তাহলে  কাজুবাদামের সাথে  খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরে পুষ্টিগুণাগুণ ও সঠিক থাকলো।

৮।  আবার  যাদের বেশি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে। অর্থাৎ রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ যখন বেড়ে যায় তখন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। কিসমিস  নিয়মিত  খাওয়ার কারনে তা ধীরে ধীরে রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এতে রক্তচাপের সমস্যা থেকে ও মুক্তি পাওয়া যায়।

উপরোক্ত নিয়মাবলী ও  এর উপকারিতা থেকে আমরা জানলাম ভেজানো কিসমিস খাওয়ার গুরুত্ব তা কি । এটিকে  ভেজানো হয়, কেননা এটি একটি চুপসানো শুকনো ফল। এটি সোনালী বাদামী রঙের হয়ে চুপসে থাকে। তাই রাতে দেড় কাপ পানিতে কয়েকটি কিসমিস দিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখবেন, দেখবেন এর রঙ গাঢ় হবে আর যতো গাঢ় হবে ততোই উপকারি। পরের দিন সকালে পানি টাকে ছেঁকে নিয়ে হালকা আঁচে গরম করে খালি পেটে খেয়ে নিন, এবং ১  ঘন্টা পর অন্যান্য খাবার খান। এতে অতি শীঘ্রই বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এবং নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা কি? এবং কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম। 

কিসমিসের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা

 কিসমিসের সাথে সকলেই প্রায়ই  আমরা পরিচিত।  আসলে কিসমিস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আর  কিসমিস হল আঙুর ফলের শুকনো  রূপ। তাই কিসমিসকে শুকনো ফলের রাজা বলা হয়। সোনালী-বাদামী রংয়ের চুপসানো ভাঁজ হওয়া ফলটি খুবই শক্তিদায়ক। যার নাম  হচ্ছে কিসমিস। যা তৈরি করা হয় সূর্যের তাপ অথবা 

 মাইক্রোওয়েভ ওভেনের সাহায্যে। তাপের ফ্রুক্টোজগুলো জমাট বেঁধে পরিণত হয় কিসমিসের । তাই  এভাবেই আঙ্গুর শুকিয়ে তৈরি করা হয় মিষ্টি স্বাদের কিসমিস। যেকোন মিষ্টি খাবারের স্বাদ এবং সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য কিসমিস ব্যবহার করা হয় প্রায় সব মিষ্টি খাবারে ।

তাছাড়াও পোলাও, কোরমা, জরদ্দা এবং অন্যান্য অনেক খাবারে কিসমিস ব্যবহার করা  হয়। রান্নার কাজে ব্যবহার করা হলেও কিসমিস সাধারণত কেউ এমনিতেই খেতে চান   না। অনেকে এটাকে শুধু খাওয়াকে ক্ষতিকর  বলে মনে করে থাকেন । অথচ বড় বড় পুষ্টিবিদ ডাক্তারদের মতে,প্রতি ১৫০ গ্রাম কিসমিসে আছে:

  • এনার্জি ৩০৫ কিলোক্যালরি,
  •  কার্বোহাইড্রেট ৭৫.৭গ্রাম,
  •  ডায়েটরি ফাইবার ২.২ গ্রাম, 
  • ফ্যাট ০.৪গ্রাম, 
  • প্রোটিন ২.৯গ্রাম, 
  • ক্যালসিয়াম ৮৮মিলিগ্রাম, 
  • আয়রন ৮.৮ মিলিগ্রাম, 
  • পটাসিয়াম ৮০ মিলিগ্রাম 
  • এবং  সোডিয়াম ২০.৪ মিলিগ্রাম।

 এটি খেলে  রক্তে শর্করার মাত্রায় ঝামেলা  করে না। এটি খেলে শরীরের রক্তে দ্রুত বৃদ্ধি পায়, পিত্ত ও বায়ুর সমস্যা দূর হয়ে যায় । এটি হৃদপিণ্ডের জন্য খুবিই  উপকারি।দেহে শক্তি সরবরাহ করতে কিসমিস অনেক সাহায্য করে।

 আবার শরীরের দুর্বলতা দূরীকরণে ও  কিসমিসের গুরুত্ব অনেক। দেহে শক্তি সরবরাহ করতে কিসমিসের অবদান অনেক অনেক  বেশি। কিসমিসে আছে  চিনি, গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ, যা খুব দ্রুত  দেহে এনার্জি সরবরাহ করে । তাই দুর্বলতার ক্ষেত্রে কিসমিস শরীরের জন্য  খুবই উপকারী।

 দাঁত এবং মাড়ির সুরক্ষাতে কিসমিস  খুব উপকারী। 

 ছোট বাচ্চারা  মিষ্টি জাতীয় খাবার বা ক্যান্ডি ও চকলেট খেয়ে তাদের  দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি করে থাকে। তবে  এগুলির পরিবর্তে বাচ্চাদের কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করালে, তাদের দাঁতের সুরক্ষা হবে। আবার  একই স্বাদ বার বার  পাওয়ার সাথে সাথে বিপুল পরিমাণ উপকারও হবে । চিনি থাকার সাথে সাথে  কিসমিসে রয়েছে ওলিনোলিক অ্যাসিড, যা মুখের ভেতরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলো  জন্মাতে বাঁধা দেয়।

 হার মজবুতে কিসমিস

কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা  আমাদের হাড় মজবুত করতে অনেক  ভূমিকা পালন করে। কিসমিসে আরো রয়েছে বোরন নামক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস, যা হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে থাকে ।  তাই প্রতিদিন কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস  আমাদের হাড়ের ক্ষয় এবং বাতের ব্যথা  দূর করতে সাহায্য করে ।

 বর্তমান সময়ে অনেক রুগী অস্টিওপরোসিস (হাড়ের একধরনের রোগ) আক্রান্ত হচ্ছেন। এই রোগটি  বোরন নামক খনিজ পদার্থের অভাবে হয়ে থাকে ।  তাই কিসমিশে আছে প্রচুর পরিমাণ বোরন, যা অস্টিওপরোসিস রোগের প্রতিরোধক হিসেবে খুবই সাহায্য করে । সুতরাং পরিবারের সবাইকে নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার প্রতি  অভ্যাস করানো উচিৎ। 

 যেকোনো ইনফেকশনের সম্ভাবনা দূরীকরণে কিসমিস

কিসমিসের মধ্যে আছে পলিফেনলস এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিইনফেমেটরী উপাদান। যা কাঁটা-ছেড়া বা ক্ষত হতে ইনফেকশন হওয়ার হাত থেকে দূরে রাখে।

 ক্যান্সার প্রতিরোধে কিসমিস

কিসমিসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের কোষগুলোকে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের কোষ উৎপন্ন হওয়ায় বাধা প্রদান করে থাকে।  কিসমিসে আরো আছে ক্যাটেচিন, যা পলিফেনলিক অ্যাসিড। এটি ক্যান্সার মুক্ত রাখতে সাহায্য করে থাকে ।  আবার খাবারে প্রচুর পরিমানে আঁশ থাকলে কোলোরেক্টারাল ক্যান্সার ঝুঁকি কমে যায়। দুই টেবিল চামচ কিসমিস  ২ গ্রাম পরিমাণ আঁশ থাকে। তাই কিসমিসের আঁশ ক্যান্সারের ঝুঁকি একবারে  কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।

 কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে কিসমিস 

 কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে কিসমিসের ভুমিকা অনেক,এতে আছে  প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা আমাদের দেহের  পরিপাকক্রিয়া বা হজম  দ্রুত হতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা খুব সহজেই দূর করে দেয়।

রক্তশূন্যতা দূর করতে কিসমিস  অনেক উপকারী। 

 মানুষের রক্তশূন্যতার কারণে অবসাদ, শারীরিক দুর্বলতা, বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক সময়  কমে যেতে পারে।  আবার অনেক সময়  বিষণ্ণতা  দেখা দিতে পারে। কিসমিসে আছে, প্রচুর পরিমাণে লৌহ উপাদান, যা  দেহের রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।

জ্বর নিরাময় করতে সাহায্য করে কিসমিস

কিসমিসে  আছে প্রচুর পরিমানে ব্যাকটেরিয়ারোধী, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান।  যার ফলে এটা ভাইরাল এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং  জ্বর নিরাময় করতে সাহায্য কারে।

 দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিকরনে ও কিসমিস  সাহায্য করে।

রক্তে ভিটামিন এ, এ-বিটা ক্যারোটিন এবং এ-ক্যারোটিনয়েড থাকে। কিসমিস এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। যা চোখের ফ্রি-রেডিকল দূর করতে সক্ষম হয় ।  আবার কিসমিস খেলে সহজে শরীরে বয়সের ছাপ পড়ে না।  আবার কিসমিস খেলে চোখের অনেক উপকার হয় যেমন, দৃষ্টি শক্তি হ্রাস হয়না আবার চোখে ছানি পড়ে না।এর  পাশাপাশি পেশী শক্তি ও  হ্রাস পায় না। কিসমিস চোখের জন্য খুবই  উপকারি।

 রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

কিসমিস যে শুধুমাত্র রক্তের মধ্যে থাকা বিষো উপাদান কমায় তাই না, বরং এটি  রক্তচাপও কমিয়ে থাকে । কিসমিসের প্রধান উপাদান,হলো  পটাশিয়াম, যা রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে।  মানুষের শরীরে থাকা উচ্চমাত্রার রাসায়নিক উপাদান সোডিয়াম, রক্তচাপ বাড়াতে সব থেকে বেশি ভূমিকা রাখে। কিসমিস খেলে শরীরের সোডিয়াম মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।

 এন্টি কোলেস্ট্রোরেল উপাদানে কিসমিস

কিসমিসের মধ্যে  কোন কোলেস্ট্রোরেল নাই–এটাই বড় কথা না। বরং কিসমিসে আছে এন্টি-কোলোস্ট্রোরেল উপাদান যা রক্তের খারাপ কোলোস্ট্রোরেলকে  কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। কিসমিস হলো দ্রবণীয় আশ,  যা লিভার থেকে কোলোস্ট্রোরেল দূর করতে সাহায্য করে। দুই কাপ কিসমিসে  আছে ৫  গ্রাম পরিমাণ দ্রবণীয় আঁশ। পলিফেনল নামক এন্টি-অক্সিডেন্টও কোলোস্ট্রোরেল শোষণকারী এনজাইমকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

 অনিদ্রা দূর করণে কিসমিস 

 অনেক মানুষ আছে  যাদের  ঠিকমত ঘুম আসে না। সেইসব মানুষের  জন্য কিসমিস অনেক উপকারি। কারন  হলো কিসমিসের মধ্যে আছে  প্রচুর আয়রন, যা মানুষের অনিদ্রার চিকিৎসায় বিশেষভাবে উপকার করে। তাই এখন থেকেই নিয়মিত কিসমিস খাওয়া অভ্যাস করুন, দেখবেন খুব শীঘ্রই এর  উপকার পাবেন।

এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে কিসমিস। 

রক্তে অধিক মাত্রায় এসিডিটি (অম্লতা) বা টক্সিসিটি (বিষ উপাদান) থাকলে, তাকে বলা হয়, এসিডোসিস। এসিডোসিসের (রক্তে অম্লাধিক্য) কারণে বাত, চর্মরোগ, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের মতো রোগ ও হতে পারে। কিসমিস রক্তের এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।

 পরিপাক তন্ত্রের উপকারিতায়

কিসমিস কোষ্ঠ্যকাঠিন্য রোগ  থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত কিসমিস খেলে হজমশক্তি ও ভাল থাকে। এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল (মুখ থেকে পায়ু) পথ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।

 মুখের স্বাস্থ্য রক্ষাকরণে কিসমিস  গুরুত্বপূর্ণ  

অনেকেই মিষ্টি স্বাদের জন্য কিসমিসকে কেন্ডির সাথে তুলনা করে ভুল করে থাকে । তারা মনে করেন,  যে এটি দাঁত ও মুখের জন্য ক্ষতিকর হয় ।  কিন্তু   বাস্তবতা   এটি   ভিন্ন। কিসমিসে  অলিনিলীক নামক এক ধরনের এসিড থাকে। যা  মুখের ভিতর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হতে বাধা প্রধান করে।

ওজন বাড়াতে সাহায্য করে কিসমিস। 

কিসমিসে আছে  প্রচুর ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ । তাই এটি ওজন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই  যদি সঠিক নিয়মে ওজন বাড়াতে চান তবে আজকের পর থেকেই  কিসমিস খাওয়া শুরু করে দিতে পারেন।

 মস্তিষ্কের জন্য উপকারি কিসমিস। 

আসলে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা অনেক।  কিসমিসে থাকা বোরন মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারি। আসলে  বোরন  আমাদের ধ্যান শক্তি  বাড়াতে সহায়ক। যার  ফলে  আমাদের কাজে  মনোযোগ বাড়ে। এটি  আবার  বাচ্চাদের পড়াশোনাতেও মনোযোগী করে তুলতে পারে।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

শুকনো কিসমিস খাওয়ার পরিবর্তে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা বেশি। কিসমিস ভিজিয়ে পানি সহ খেলে তার পরিপূর্ণ উপকারিতা পাওয়া যায়। তাছাড়া ও  কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে শরীরের রক্ত পরিষ্কার করতে দারুণ সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে  কিসমিসের পানি খেলে পেটের কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকে ওষুধ ছাড়াই সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। পাশাপাশি হজমেও দারুণ সহায়তা করে।

সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা

কিসমিস যেমনই মিষ্টি বা সুস্বাদু একটি খাবার তেমনই তার গুনাগুন। সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা রয়েছে অনেক। নিচে কয়েকটি উল্লেখ করা হলঃ

১। বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ মানুষ নানান যৌন সমস্যায় ভোগে তারা নিয়মিত কিসমিস খেলে তাদের সমস্যা দূর হবে।

২। যারা যৌন মিলনে অক্ষম তাদের জন্য কিসমিস বেশ উপকারী।কারণ কিসমিস যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং অক্ষমতা দূর করে। 

৩। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বা ক্যালরি শক্তি যা আমাদের দেহের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে এবং দূর্বলতা দূর করে।  

৪। কিসমিস খেলে  শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে । আর শরীর ও মন ভালো থাকলে যৌন মিলনে তৃপ্তি পাওয়া যায়।

৫। নিয়মিত কিসমিস খেলে যৌন মিলন দীর্ঘায়িত হয়।

কিসমিসের অপকারিতা বা কিসমিসের ক্ষতিকর দিক

কিসমিস খাওয়া আমাদের শরিরের জন্য ভালো হলেও অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন সমস্যা বয়ে আনতে পারে। কিসমিস অতিরিক্ত খেলে শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যা আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। আমরা জানি শরীরের অতিরিক্ত ওজন অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে।
কিসমিসে উচ্চ মাত্রার ট্রাইগ্লিসারাইড উপাদান রয়েছে। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ফ্যাটি লিভার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে। 

রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়

ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে অতিরিক্ত কিছু উপকার পাওয়া যায়। যেমনঃ

  • অন্ত্রের আন্দোলনকে সহজ করে
  • হাড় সুস্থ্ রাখে।
  • ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
  • দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে ইত্যাদি। 

কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

কিসমিস দিনে বা রাতে যে কোন সময় খেতে পারবেন। ভেজানো বা ভেজানো ছাড়া কিংবা কোন সেমাই পায়েস বিভিন্ন আইটেমে দিয়ে ও কিসমিস খেতে পারবেন। তবে সব থেকে বেশি উপকার হলো ভেজানো কিসমিসে। রাতে ঘুমানোর আগে দুই কাপ বা এক গ্লাস পানিতে কয়েকটি কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন ।ভেজানোর পর কিসমিস দেখতে যত গাঢ় রংয়ের হবে, সেটা তত উপকারী। পরের দিন সকালে ওই কিসমিস ছেঁকে নিয়ে খালি পেটে কিসমিসের পানি পান করুন। এবং ভেজানো কিসমিস ও খেয়ে নিন। 

প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত

প্রতিদিন আপনি এক মুটো বা ৭-১৫ টি কিসমিস খেতে পারেন। অতিরিক্ত খাবেন না। কিসমিস এর সাথে কিসমিস ভেজা পানি ও পান করতে পারেন। 

কিসমিসের দাম

কিসমিস একেক জায়গায় একেক দাম রাখে। সাধারণত এক কেজি কিসমিস ৩০০-৪০০ টাকার মধ্যেই পাবেন।আবার এর থেকে ও বেশি মূল্যে ও বাজারে পাওয়া যায়। বিভিন্ন কোয়ালিটির উপর তার দাম নির্ভর করে। 

পরিশেষে

কিসমিস  নিসন্দেহে খাওয়া যেতে পারে। এটি আমাদের শরীরের নানান উপকার করে। কিসমিসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বিদ্যমান আছে। তবে অতিরিক্ত একসাথে খাবেন না। স্বাভাবিক ভাবে খান সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ 


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *