তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ খুবই জটিল একটি সমস্যা। যাদের ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত তারা নানা সমস্যায় ভোগে থাকেন। মেকআপ করা হলেও কিছুক্ষণ পর মুখ আবার সেই তেলতেলে, চিটচিটে হয়ে যায়। তৈলাক্ত ত্বকে খুব সহজেই ধুলোবালি আটকে গিয়ে নানা সমস্যা দেখা দেয় এবং অতিরিক্ত তেল মুখের লোমকূপগুলোকে বন্ধ করে দেয়। এতে করে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয় এবং ব্রণ হওয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়। তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হলে তা সারিয়ে তোলা খুব জটিল হয়ে পড়ে।
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়
যে কারোর যে কোন সময়েই ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং যেকোন কারণে এই ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। ত্বকের যত্নের অভাব, ঘুম কম হওয়া, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম, পানি কম পান করা অথবা বয়ঃসন্ধিজনিত কারণে ব্রণের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু যাদের ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত থাকে, অন্যদের চাইতে তাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যাটি বেশি দেখা দেয়।
ব্রণ কেন হয়
ত্বক তৈলাক্ত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে যখন ত্বক থেকে অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হয়, তখন ত্বক তৈলাক্ত হয়ে ওঠে। এই সিবাম ত্বকের ছিদ্রগুলো বন্ধ করে দেয়, যা সংক্রমিত হয়ে গেলে ব্রণ দেখা দেয়। যদি উক্ত সময়ে ত্বকের সঠিক যত্ন না নেই , তবে ব্রণগুলো আস্তে আস্তে বাড়বে এবং দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। আর দীর্ঘদিন ত্বকে ব্রণের সমস্যা থাকলে ব্রণ থেকে কালো ও স্থায়ী দাগ তৈরি হতে পারে ।
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায়
একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ তেল আমাদের ত্বকের জন্য জরুরি। যা আমাদের ত্বককে স্বাস্থ্যবান এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্যে করে এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে রক্ষা করে। তৈলাক্ত ত্বকের সুবিধা হলো তেল, বলিরেখা ও মুখের রঙের কোনো পরিবর্তন হওয়া থেকে রক্ষা করে। কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকের অনেক অসুবিধাও রয়েছে। তৈলাক্ত ত্বকে খুব সহজেই ধুলো বালি আটকে যায়। এবং অতিরিক্ত তেল মুখের লোমকূপ গুলোকে বন্ধ করে দেয়। এতে করে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয় ব্রণ হওয়ার প্রকোপ বাড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ত্বক পরিষ্কার না রাখলেই ব্রণ দেখা দিতে পারে। নিচে তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য ঘরোয়া কিছু উপায় দেওয়া হলো-
১) লেবুর রস ও মধুর ফেস প্যাক
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য লেবু সবচেয়ে উপকারী ঘরোয়া উপাদান, লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড যা ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করাওর পাশাপাশি ত্বকের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং ত্বককে ব্রণ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। আর মধু হলো একটি প্রাকৃতিক উপাদান, এতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। যা তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হতে বাধা দেয়। মধু ত্বকের ভেতর থেকে আর্দ্রতা ধরে রাখে। এছাড়াও এটি ত্বকের ময়েশ্চারাইজারের স্তর ঠিক রাখে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করে।
উপকরণঃ
- এক টেবিল চামচ লেবুর রস
- এক টেবিল চামচ মধু।
ব্যবহারঃ একটি পরিষ্কার পাত্র নিন। এতে একটি সতেজ লেবু থেকে এক টেবিল চামচ রস এবং সমপরিমাণ মধু নিন। দুটোকে ভালো করে মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। দুটি উপাদান মিশে বেশ গাঢ় লিকুইড আকার ধারণ করবে। পেস্টটি ব্যবহার করার জন্য প্রথমে ভালো করে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন এবং এরপর মুখ ও ঘাড়ের অংশে পেস্টটি লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ও ঘাড় ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এটি ব্যবহারে দ্রুত ও কার্যকর ফল পাবেন।
২) বেসন ও টক দইয়েরে ফেস প্যাক
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে বেসন এবং দইয়ের ফেস প্যাকটি খুবই কার্যকরী। বেসনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ভিটামিন যা তৈলাক্ত ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে। টক দইয়ে আছে ভিটামিন এ ও সি যা ত্বকের মৃত কোষগুলোকে ধ্বংস করে এবং ত্বককে আরো উজ্জ্বল করে তোলে। এই দুটি উপাদান একত্র হয়ে তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ সারাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।দই ত্বকের ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে নরম ও মসৃণ করে তোলে আর বেসন ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা আরো বৃদ্ধি করে।
উপকরণঃ
- ১ টেবিল চামচ বেসন
- ১-২ টেবিল চামচ দই
- ১ চা চামচ মধু
- ১ চিমটে হলুদ।
ব্যবহারঃ একটি পরিষ্কার পাত্রে দুই টেবিল চামচ বেসন ও এক টেবিল চামচ দই নিয়ে একটি চামচের সাহায্যে ভালো করে নেড়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর তাতে দুই ফোটা মধু ও এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে নিন। এবার পেস্টটি মুখে ও গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। পেস্টটি লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ২০-৩০ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালো করে মুখটি ধুয়ে নিন। প্রাথমিক অবস্থায় চেষ্টা করবেন সপ্তাহে কমপক্ষে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে। যখন ব্রণ আস্তে আস্তে কমে যাবে তখন ১৫ দিন পরপর ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
৩) ডিম, শসা ও পুদিনার ফেস প্যাক
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ডিমের সাদা অংশ খুবই উপকারী। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে এবং ত্বক টানটান করে। পুদিনা পাতায় স্যালিসিলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন এ রয়েছে। যা ব্রণের সকল দাগ দূর করতে দারুণ ভাবে কাজ করে। আর শসা সবজি হিসেবে ব্যবহার হলে ও এতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। এতে ভিটামিন-কে, ভিটামিন-সি, ক্যাফিক এসিড ও প্রায় ৯০ শতাংশ পানি রয়েছে যা আপনার ত্বককে নরম, মসৃণ এবং উজ্জ্বল করতে সহায়তা করবে।
উপকরণঃ
- একটি ডিমের সাদা অংশ
- শসার রস
- এবং পুদিনাপাতা।
ব্যবহারঃ একটি ডিমের সাদা অংশের সাথে শসার রস এবং পুদিনাপাতার পেস্ট মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এরপর এটি ভালো করে ত্বকে লাগান। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে মুখটি ধুয়ে ফেলুন।পুদিনার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বককে ব্রণমুক্ত রাখবে। তাছাড়া শসা ত্বককে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখবে।
৪) লেবুর রস এবং দারচিনির ফেস প্যাক
লেবুতে আছে ভিটামিন ‘সি। যা তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। আর মুখের রোমকূপ পরিষ্কার এবং ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে দারচিনি খুবই কার্যকরী একটি উপাদান।
উপাদানঃ
- কয়েক টুকরো দারচিনি
- এবং এক টেবিল চামচ লেবুর রস
ব্যবহারঃ দারচিনি গুলোকে গুড়ো করে নিন। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মিশান। এই পেস্টটি নিয়মিত রাতে ঘুমনোর পূর্বে, মুখে যেখানে ব্রণ আছে সেখানে লাগিয়ে রাখুন। এটি সারারাত লাগিয়ে রাখতে পারেন। লেবুর রস ও দারচিনি আমাদের মুখের ব্রণ এবং কালো দাগ দূর করতে খুবই কার্যকরী উপাদান।
৫) মধু ও লেবুর রস
মধুতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।যা ত্বকের সুরক্ষায় একটি অত্যন্ত উপকারি প্রাকৃতিক উপাদান। এটি ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা প্রদানে সহায়তা করে। ফলে ত্বকে কম তৈলাক্ত হয়। লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড যা ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর করে এবং ত্বককে ব্রণ হওয়া থেকে সুরক্ষা রাখে।
উপাদানঃ
- ১ টেবিল চামচ লেবুর রস
- এবং ১ টেবিল চামচ মধু।
ব্যবহারঃ একটি পরিষ্কার পাত্রে ১ টেবিল চামচ মধু নিন। এবং মধুর সমপরিমাণ লেবুর রস নিন। মধু ও লেবুর রস ভালো করে মিক্স করুন। এবার এই পেস্টটি মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে মুখটি ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এটি ব্যবহারের ফলে মুখের তৈলাক্ত ভাব এবং ব্রণ দূর হয়ে যাবে।
৬) বেকিং সোডা ও লেবুর রস
বেকিং সোডার ছোট ছোট দানাগুলো ত্বকের মৃত কোষ এবং ময়লা দূর করতে সহায়তা করে। এরফলে ত্বক স্বাস্থ্যকর এবং কোমল হয়। বেকিং সোডার সঙ্গে লেবুর মিশ্রণ তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণের উপদ্রবকে দ্রুত কমিয়ে আনে।
উপকরণঃ
- ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা
- এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস
ব্যবহারঃ একটি পরিষ্কার পাত্রে ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ভালভাবে মিশিয়ে নিন। এবার এই পেস্টটি অল্প পরিমাণে ব্রণের জায়গায় লাগান। ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখটি ধুয়ে ফেলুন। এতে খুব দ্রুতই উপকার পাবেন।
৭) হলুদ এবং টক দইয়ের পেস্ট
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ এবং কালো দাগ থেকে মুক্তি পেতে কাঁচা হলুদ ও টক দইয়ের পেস্টটি খুবই কার্যকরী। হলুদে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা ত্বকের ব্রণ, কালো দাগ, শুষ্কতা, তৈলাক্ততা কমানো এবং বলিরেখা থেকে সুরক্ষা রাখে। আবার টক দইয়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করা, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, মসৃণ আর দাগমুক্ত করার জন্য এটি খুবই কার্যকরী।
উপাদানঃ
- ১ টেবিল চামচ টক দই
- এবং এক চিমটে হলুদ।
ব্যবহারঃ একটি পরিষ্কার পাত্রে ১ টেবিল চামচ টক দই এবং এক চিমটি কাঁচা হলুদ নিয়ে মিক্স করুন। এরপর এই পেস্টটি ভালোকরে মুখে লাগান, যে জায়গায় কালো দাগ রয়েছে। লাগিয়ে ২0-২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালো করে মুখটি ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত কয়েকদিন ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন।
৮) মধু এবং দারুচিনির ফেস প্যাক
মধুতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে, বলিরেখা কমিয়ে ত্বক টানটান করতে এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। অন্যদিকে দারুচিনি ত্বকে যেকোনও ধরনের সংক্রমণ বা অ্যালার্জি দূর করতে খুব ভালো কাজ করে।
উপকরণঃ
- এক টেবিল চামচ মধু
- এবং এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া।
ব্যবহারঃ একটি পরিষ্কার পাত্রে এক টেবিল চামচ মধু এবং এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া নিন। মধু এবং দারুচিনি একসঙ্গে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর যে স্থানে ব্রণ বা কালো দাগ রয়েছে সেস্থানে এই পেস্টটি লাগান। রাতে ঘুমানোর আগে এই ফেস প্যাক ব্যবহার করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যাবে। এরপর সকালে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখটি ভালো ধুয়ে নিন।
৯) মধু এবং টক দইয়ের পেস্ট
মধুকে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার বলা হয়। মধু ত্বকের ভেতর থেকে ময়লা বের করে এবং মরা কোষ দূর করে ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলে। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। টক দইয়ে আছে ক্যালসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন। দই মুখের ব্রণ, রুক্ষতা, অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব দূর করে ত্বককে মসৃণ এবং আরো উজ্জ্বল করে তোলে। টক দই এবং মধুর ফেস প্যাকটি ত্বকের জন্য খুবই কার্যকরী।
উপকরণঃ
- ১ টেবিল চামচ টকদই
- এবং ১ টেবিল চামচ মধু
ব্যবহারঃ একটি পরিষ্কার বাটিতে ১ টেবিল চামচ দই ও ১ টেবিল চামচ মধু নিয়ে ভালো করে মিক্স করুন। এবার এই পেষ্টটি মুখে ভালোভাবে মাসাজ করুন। ২০-৩০ মিনিট অপেক্ষা করে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখটি ধুয়ে ফেলুন। এই পেষ্টটি আপনার ত্বককে ব্রণ থেকে পরিত্রাণ দেবে। মধুর এন্টিভাকুটারিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য ব্রণ-সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংস করে।
১০) ভিটামিন ‘সি’ সিরাম
ভিটামিন সি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন সি ত্বককে টানটান, ত্বকের বলিরেখা এবং ত্বকের কালচে দাগ দূর করে ত্বককে আরো উজ্জ্বল করে তোলে। এছাড়াও সিরাম তৈলাক্ত ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে কাজ করে। তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ এবং ত্বকের যেকোনো কালো দাগ দূর করার জন্য ভিটামিন ‘সি’ সিরাম খুবই উপকারী। সিরাম ত্বকে দারুণ কাজ করে।
১১) টুথপেসট
টুথপেস্ট ব্রণের জন্য খুব ভালো একটি উপাদান। ব্রণ আক্রান্ত স্থানে টুথপেস্ট লাগিয়ে রাখুন। এটি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রণ আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন। ২-৩ দিনের মধ্যে ব্রণ আস্তে আস্তে চলে যাবে। তবে এটা পুরো মুখে লাগানো যাবে না। যেখানে যেখানে ব্রণ আছে সেখানে সেখানে লাগাতে হবে।
মুখের ব্রণ এবং কালো দাগ দূর করতে করণীয়
১. ব্রণ দূর করার জন্য বা ব্রণ না হওয়ার জন্য বেশি বেশি পানি পান করুন। দিনে অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি পান করবেন।
২. কখনো ব্রণ হওয়ার জায়গায় নখ লাগাবেন না ফরে হিতে বিপরীত হতে পাযেন। ব্রণে নখ দিয়ে খুঁচালে বা চাপ দিলে নখের কারণে আরো দাগ হয়ে যাবে। তাই চুলকালে সে জায়গায় হাত দিবেন না। প্রয়োজনে পরিষ্কার একটা কাপড় দিয়ে উপরে হালকা লাগাবেন যেন চুলকানি চলে যায়।
৩. ব্রণ ফেটে যাওয়ার পর সব সময় ক্ষত জায়গাটা তুলা দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিবেন। আর যদি সারাদিন বাইরে থাকা হয় তা হলে ধুলা-ময়লার হাত থেকে জায়গাটা বাঁচাতে অল্প করে ভ্যাসলিন লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে জায়গাটার উপরে একটি স্তর পড়বে এবং নোংরাটাকে আটকে দেবে।
৪. বাহির থেকে আসার সাথে সাথেই পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। কেননা ঘামে চেহারা তৈলাক্ত হয়ে যায় এর থেকে ব্রণের সৃষ্টি হতে পারে। তাই আপনার চেহারায় যখনি তৈলাক্ত মনে হবে সঙ্গে সঙ্গে মুখ ধুয়ে নিন।
৫. মুখের কালচে বা কালো দাগ দূর করতে মধু ব্যবহার করতে পারেন। এরজন্য নিয়মিত রাতে তুলা দিয়ে নরম বল বানিয়ে তা নিমপাতার সেদ্ধ পানিতে ভিজিয়ে তা মুখে লাগিয়ে নিন। নিয়মিত ব্যবহারে মুখের ব্রণ, ক্ষত চিহ্ন, মুখের কালচে বা কালো দাগ খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে।
শেষ কথাঃ
মুখের ব্রণের সমস্যা ছেলে মেয়ে সবারই দেখা দেয়। উপরে উল্লেখিত বিষয় গুলো ব্যবহার ও মেনে চললে মুখের ব্রণ দূর করার পাশাপাশি মুখের ব্রণের কালো দাগ ও দূর করতে পারবেন। আশা করি এই নিয়ম গুলো মেনে চললে খুব দ্রুত ভালো উপকার পাবেন।
Leave a Reply