প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট এর নাম ও দাম : প্রেগন্যান্সি কিট দিয়ে বর্তমানে ঘরে বসেই কেউ গর্ভবতী হলো কিনা তা খুব সহজেই নির্ভুল ভাবে জানা যায়। এটার ব্যবহার খুবই সহজ এবং নিজেই বাজার থেকে কিনে এনে নিজেই পরিক্ষা করতে পারবেন। যখন একটা নারী গর্ভধারণ করে তখন তার শরীরে বিটা এইচসিজি নামে একটি হরমোন তৈরি হয়, যেই হরমোনের উপস্থিতি প্রস্রাবে ও পাওয়া যায়। তাই প্রেগন্যান্সি কিট দিয়ে প্রস্রাবএর মাধ্যমে প্রেগন্যান্সি পরিক্ষা করা হয়। তাই চাইলেই ঘরে বসে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার উপায় জেনে নিজেই প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ভুলভাবে জেনে নিতে পারেন।
প্রিয় পাঠক! আপনার যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য বা আপনার যে কোন প্রশ্নের উত্তর জানতে আমাদের প্রশ্ন-উত্তর সাইট Ask Panchmishali তে প্রশ্ন করুন।
পরিক্ষার মূল পদ্ধতি হল যখন একটা সন্তান গর্ভে আসে তখন যে শরীরে বিটা এইচসিজি হরমোন তৈরি হয় তা প্রস্রাবের মধ্যে তার উপস্থিত পাওয়া যায়। তখন প্রেগন্যান্সি কিটে প্রস্রাব নিয়ে টেস্ট করা হয়। এভাবে কিট দিয়ে পরিক্ষা করা হয়।
সহবাসের পর যখন মাসিক মিস হয় তখন নারীরা চিন্তিত হয়ে পরে।এর কারণ দুটি তা হল অনেকেই সন্তানের জন্য চেষ্টা করতেছেন কিন্তু বাচ্চা কনসিভ হচ্ছে না তাই হঠাৎ যখন মাসিক না হয় তখন ভাবে বাচ্চা কনসিভ হল কিনা। নাকি কোন সমস্যার কারনে মাসিক হচ্ছে না।
আবার অনেকেই আছে বাচ্চা নিতে চাচ্ছেন না কিন্তু সহবাসের পর যখন পিরিয়ড মিস হয় তখন তারা চিন্তিত হয়ে পরে যে বাচ্চা কনসিভ হল কিনা ওই সময় প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে সেই চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই কিট দিয়েই ঘরে বসে নিজেই টেস্ট করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ মাসিক না হলে কি করবেন? দাম সহ জেনে নিন মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম
যেসব দম্পতিরা দীর্ঘদিন চেষ্টা করছেন বাচ্চা নেওয়ার কিন্তু বাচ্চা কনসিভ হচ্ছে না তাদের কাছে প্রতিটা দিনই কষ্টের মনে হবে। হঠাৎ যখন পিরিয়ড মিস হয় তখন তাদের চিন্তা আরো বেড়ে যায় যে এবার কি তাহলে “দুটো দাগ” আসবে খবর টা কি খুশির হবে নাকি আবারো হতাশ হতে হবে।
প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট এর নাম ও দাম। ঘরে বসে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার উপায়।
যারা মা হওয়ার চেষ্টায় আছেন তারা বুঝতে পারছেন আমি কোন দুটো দাগের কথা বলছি। প্রেগন্যান্সি কিট পরীক্ষা বিশ্বের সকল দেশের সকল নারীরাই সাধারন্ত এই পদ্ধর্তিতে প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করে থাকেন। আমাদের দেশের নারীরাও এই প্রেগন্যান্সি কিট এর ব্যবহার করে থাকেন।
মাসিক মিস হওয়ার পর শরীরে কোনও পরিবর্তন বুঝলে আপনি আগে ঘরে বসেই প্রেগন্যান্সি কিট এর মাধ্যমে প্রাথমিক ভাবে টেস্ট করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অনেকেই দ্বিধা দ্বন্ধে ভুগেন যে রেজাল্ট কি সঠিক হলো কিনা। তবে আপনি যদি সঠিক সময় এবং নিয়ম মেনে যদি প্রেগন্যান্সি কিট ব্যবহার করেন, তার সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু ৯৯ শতাংশ।
বাকি ১ শতাংশ নির্ভর করে ডাক্তারের উপর। প্রাথমিক ভাবে টেস্ট করার পর যদি পজিটিভ রেজাল্ট আসে তাহলে পরবর্তীতে কোন ক্লিনিক্যাল টেস্ট করিয়ে ১০০% নিশ্চিত হয়ে নিন। যাইহোক দীর্ঘ আলোচনা হলো এখন আমরা মূল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আর তা হল প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট এর নাম ও দাম। ঘরে বসে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার উপায়।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট কি?
কোন নারি অন্তঃসত্ত্বা বা গর্ভবতী হল কিনা একটি যন্ত্রের মাধ্যমে ঘরে বসেই প্রাথমিক পরিক্ষার মাধ্যমে জানতে পারে। সেই যন্ত্রটি কেই বলা হয় প্রেগন্যান্সি কিট।
প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট এর নাম ও দাম
প্রেগনেন্সি টেস্ট কিটের নাম জানতে চায় অনেকেই। আসলে আমাদের দেশে কয়েকটি টেস্ট কিট আছে খুব পরিচিত। তা ছাড়াও আরো বিভিন্ন টেস্ট কিট রয়েছে। তবে যে গুলো বেশ পরিচিত সেই গুলোর কথাই বলবো। ৪ টি টেস্ট কিট এর কথা বলবো।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট এর নাম
1. Get Sure ( HCG Urine Pregnancy Test Cassettes)
কিনতে অর্ডার করুন এখানে
অর্ডার করুন এখানে
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট এর দাম
উল্লেখিত প্রথম ২ টি প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট এর দাম এক পিস ২০-৫০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন। ৩য় টার দাম ৮০-১০০ টাকা এবং ৪র্থটার দাম ১০০ টাকার উপরে লাগবে। দাম এর তারতম্যের কারণ হল একেক জায়গায় একেক দোকানে একেক দাম রাখে তাই এভাবে উল্লেখ করা হল।
মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়।
মাসিক মিস হওয়ার পর একটা বাচ্চা গর্ভে আসতে সময় লাগে ১০ -১৫ দিন। তখন কিছু প্রেগন্যান্সির লক্ষণ বুঝা যেতে পারে। ওই সময় টেস্ট করা যেতে পারে। গর্ভধারণের ৬ সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৬০ ভাগ নারী গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারে এবং ৭ সপ্তাহের মধ্যে ৯০ ভাগ মহিলারা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারেন যে তারা প্রেগন্যান্ট।
আরো পড়ুনঃ প্রথমবার গর্ভবতী হওয়া ১০ টি লক্ষণ।
মিলনের কত দিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয়
মিলনের পর একটা বাচ্চা কনসিভ হতে ২ সপ্তাহ সময় নেয়। যদি প্রেগন্যান্সির লক্ষণ বুঝা যায় তাহলে মিলনের ২ সপ্তাহ পর টেস্ট করতে পারেন। অন্যথায় সঠিক রেজাল্ট পাওয়ার জন্য ২১ দিন পর টেস্ট করা উচিৎ। আর যদি মিলনের পর পরই পিরিয়ড এর সময় হয় কখন পিরিয়ড মিস হয় এবং কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় তাহলে পিরিয়ড মিস হওয়ার এক সপ্তাহ বা ১০ দিন পর ও টেস্ট করতে পারেন। এক্ষেত্রে ও ২ সপ্তাহ পর টেস্ট করালে সঠিক রেজাল্ট পাওয়ার যায়।
ঘরে বসে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার উপায় বা প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট ব্যবহারের নিয়ম
প্রেগন্যান্সি কিট কিনে আনলেন কিন্তু ব্যবহার বা কিভাব টেস্ট করবেন তা জানেন না তাহলে তো লাভ নেই। অনেক টেস্ট কিট এর গায়ে ব্যবহার বিধি লেখা থাকে। সেটা ভাল করে বুঝে নিবেন। আমি প্রেগন্যান্সি কিট ব্যবহারের নিয়ম নিচে উল্লেখ করছি। আপনারা চাইলে তা অনুসরণ করতে পারেন।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার সঠিক সময়
যাদের মাসিক নিয়মিত হয় তাঁরা মাসিক হওয়ার তারিখ পেরিয়ে যাওয়ার অন্তত এক সপ্তাহ বা আগের মাসিক এর থেকে ৩৫ দিন পার হওয়ার পর এই পরীক্ষা করবেন। আর যাদের মাসিক অনিয়মিত তারা গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ বুঝতে পারলে তখন পরীক্ষা করুন।
যেভাবে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করবেন
সকাল বেলার প্রথম প্রস্রাব দিয়ে পরীক্ষা করলে ভালো ও সঠিক রেজাল্ট আসার সম্ভবনা বেশি থাকে। অনেকেই হয়তো ভাবছেন সকালের প্রস্রাব কেন? বা অন্যান্য সময়ের প্রস্রাব দিয়ে করা যাবেনা? হ্যা, অন্যান্য সময় বিকাল বা রাতে ও টেস্ট করতে পারেন তবে এর ফলাফল নির্ভুল আসার সম্ভাবনা কম থাকে।
এর কারণ হল বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের প্রথম যে প্রস্রাব টা হয় তা অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি ঘন হয়ে থাকে। আর হরমোন (এইচসিজি)র উপাদানটি ওই সময়ই প্রস্রাবে বেশি পরিমাণে থাকে । যত বেলা গড়ায় ততই ইউরিন পাতলা হয় এবং তাতে (এইচসিজি)র উপস্থিতি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তাই রাতে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করলে আপনি গর্ভবতী হলেও অনেক সময় রিপোর্ট নেগেটিভ আসতে পারে।
প্রথমে যে কোন একটা পাত্রে সকালের প্রস্রাব রাখবেন। তারপর টেস্ট কিট বের করবেন এবং তার একপাশে একটি ছিদ্র আছে তাতে ৩ ফুটা প্রস্রাব দিবেন। তারপর ৫ মিনিট অপেক্ষা করবেন।
আরো পড়ুনঃ ঘন ঘন প্রস্রাব কেন হয়? ঘন ঘন প্রস্রাব দূর করার ঘরোয়া উপায়
প্রেগন্যান্সির রিপোর্ট কীভাবে বুঝবেন?
৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর স্ট্রিপে একটি রঙিন রেখা বা লাইন দেখালে বুঝতে হবে প্রেগন্যান্সি নেগেটিভ বা আপনি অন্তঃসত্ত্বা নন। স্ট্রিপে পাশাপাশি দুটি রঙিন রেখা বা লাইন দেখালে বুঝতে হবে প্রেগন্যান্সি পজিটিভ, এমনকি একটি স্পষ্ট ও হালকা রেখা হলেও পজিটিভ ধরতে হবে অর্থাৎ আপনি অন্তঃসত্ত্বা।
আর যদি কোনো রঙিন রেখা না দেখা যায়, তবে আপনার পরিক্ষা সঠিক হয়নি, পরীক্ষা বাতিল বলে ধরে নিতে হবে। একটা কিট দিয়ে দ্বিতীয় বার পরিক্ষা করা যাবেনা। আবার আরেকটি স্ট্রিপ দিয়ে নতুন করে পরিক্ষা করতে হবে। ২০ মিনিট বা আধা ঘণ্টা পর নেগেটিভ ফলাফল যদি পজিটিভ দেখায় তাহলে ও রিপোর্টটি গ্রহনযোগ্য হবে না।
প্রেগন্যান্সি নেগেটিভ কিন্তু মাসিক হচ্ছে না?
প্রেগন্যান্সি কিট দিয়ে বাড়িতে টেস্ট করার পর রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে কিন্তু মাসিক হচ্ছে না, তাহলে আপনি আরো এক সপ্তাহ অপেক্ষা করে পুনরায় পরীক্ষা করুন। এবারও যদি রেজাল্ট নেগেটিভ আসে তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। প্রেগন্যান্সি ছাড়া আরো বিভিন্ন সমস্যার কারণেও মাসিক বন্ধ হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের সাদাস্রাব দূর করার ঘরোয়া ঔষধ
পরীক্ষার সঠিক তথ্য
প্রেগন্যান্সি কিট দিয়ে সঠিকভাবে টেস্ট করার পর প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে এই কিট নির্ভুল তথ্য দেয়। কিন্তু কিছু কারণে এটি ফলস পজিটিভ রেজাল্ট দেখাতে পারে। মানে আপনি প্রেগন্যান্ট নন, তবু ও পজিটিভ দেখাতে পারে । এর কারণ কয়েকটি হতে পারে।
১। আপনি যদি এইচসিজি হরমোনযুক্ত কোনো ওষুধ সেবন করেন।
২। কোনো কোনো রোগের কারণে এইচসিজি(HCG) হরমোন অতিমাত্রায় নিঃসৃত হয় (মোলার প্রেগন্যান্সি, কোরিওকারসিনোমা, আইলেট সেল টিউমার ইত্যাদি)।
৩। বাচ্চা গর্ভপাতের পরপর অথবা সন্তান জন্মের ৪ সপ্তাহের মধ্যে টেস্ট করলে পজিটিভ রেজাল্ট দেখাতে পারে। কারণ তখনো অতিরিক্ত হরমোন শরীরে থাকে।
৪। কিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা কিট ব্যবহার অযোগ্য হলে ভুল রেজাল্ট বা কোন রেজাল্টই না আসতে পারে।
রেজাল্ট ফলস নেগেটিভ হয় কেন?
অনেক সময় উল্টোটাও হতে পারে। রেজাল্টড় নেগেটিভ দেখাচ্ছে কিন্তু আপনি প্রেগন্যান্ট । এমনটা হওয়ার কারণ হল যদি নির্ধারিত সময়ের আগেই টেস্ট করে ফেলেন অর্থাৎ মাসিকের নির্ধারিত তারিখের এক সপ্তাহ পার না হওয়ার আগেই যখন বাচ্চা গর্ভে আসে নায় তখন যদি টেস্ট করেন নেগেটিভ আসতে পারে।
আবার যাঁরা প্রস্রাব ধরে রাখতে পারেন না বার বার প্রস্রাব করেন বা টেস্টের আগে প্রচুর পরিমানে পানি পান করলে প্রস্রাবে হরমোনের মাত্রা কমে যায় ফলে রেজাল্ট নেগেটিভ আসতে পারে।
শেষ কথা
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট দিয়ে ঘরে বসে টেস্ট করা সহজ। তবে কিট দিয়ে টেস্ট করার পর রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর সব থেকে ভাল হবে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা। ডাক্তার হয়তো রক্তের কিছু সাধারণ পরীক্ষা আর আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে দিবেন। সন্দেহ হলে ল্যাবরেটরিতে গিয়ে আবার প্রস্রাব পরীক্ষা করে নিতে পারেন। এতে সব সন্দেহ দূর হবে এবং নিশ্চিত থাকতে পারবেন। ধন্যবাদ
প্রিয় পাঠক! আপনার যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য বা আপনার যে কোন প্রশ্নের উত্তর জানতে আমাদের প্রশ্ন-উত্তর সাইট Ask Panchmishali তে প্রশ্ন করুন।
Leave a Reply