ছোলার উপকারিতা ও অপকারিতা: কাঁচা ছোলা একটি শক্তিশালী খাবার। এই ছোলার উপকারিতা সম্পর্কে সবারই জানা। রমজানে মাসে প্রতিদিন ইফতারে আমরা ছোলা খায়। শুধু রমজানেই নয় সারা বছর ছোলা বুট খাওয়া যায়। ছোলা কাঁচা হোক বা সিদ্ধ সব ভাবেই খেতে পারবেন। তবে কাঁচা ছোলার উপকারিতা সব থেকে বেশি।
ছোলার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের বেশিরভাগ মানুষ শরিরের ওজন বাড়াতে কাঁচা ছোলা খায়।ওজন বাড়ানো ছাড়া ও আরো বিভিন্ন কারণে কাঁচা ছোলা খাওয়া যায়। আজ আমরা কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
ছোলার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
সাধারণত কাঁচা ছোলার গুণ সম্পর্কে আমরা মোটামোটি প্রায়ই সবাই জানি। প্রতি ১৫০ গ্রাম ছোলায় আমিষ আছে প্রায় ২০ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট এবং প্রায় ৭০ গ্রাম, ফ্যাট মাত্র ৬ গ্রাম, ২৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘এ’ আছে প্রায় ২০০ মাইক্রোগ্রাম এবং আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন বি-২ ।
তাছাড়া ছোলায় আছে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, ম্যাগনেশিয়াম, খনিজ লবণ এবং আরও ফসফরাস । আরও অনেক উপকার তো আছেই। উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ যুক্ত খাবার হলো ছোলা । সাধারণত ছোলা কাঁচা, সেদ্ধ অথবা তরকারির মতো রান্না করে খাওয়া যায়। কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে তারপর খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে তা কাঁচা আদার সাথে মিশিয়ে খেলে শরীরে যেমন আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিক যাবে।
অনেকেই হয়তো জানে না, আমিষ মানুষের শরীরকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানাতে সাহায্য করে । আর অ্যান্টিবায়োটিক শরীরের যেকোনো অসুখের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে থাকে । ছোলার কিছু গুনাগুন জেনে নেই।কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। এবং এটা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায় । নিচে দেওয়া হলঃ
আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা কি? এবং কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম।
ডাল হিসেবেঃ
ছোলা হলো খুবই পুষ্টিকর একটি ডাল। যা মলিবেডনাম এবং ম্যাঙ্গানিজ এর অন্যতম একটি উৎস। ছোলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফলেট ও খাদ্য আঁশ। তার সাথে আছে আমিষ, ট্রিপট্যোফান, কপার, ফসফরাস ও আয়রণ।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেঃ
যেসব খাবারের সাথে ছোলা যুক্ত করলে টোটাল কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমে আশে। ছোলাতে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় এই দুই ধরনের খাদ্য আঁশ থাকে, যা মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে । এছাড়া আঁশ, পটাসিয়াম, ভিটামিন ‘সি’ এবং ভিটামিন বি-৬ হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও সাহায্য করে থাকে ।যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। এই ছোলার ডাল আঁশসমৃদ্ধ যা রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। একটি পরিক্ষায় জানা গেছে যে, যারা প্রতিদিন ৪০৭৮ মিলিগ্রাম ছোলার ডাল খায়,তাদের হৃদরোগ থেকে মৃত্যুর ঝুঁকি ৫০ % কমে যায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ
একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে,যে সব অল্পবয়সী নারীরা খুব বেশি পরিমাণে ফলিক এসিডযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন, তাদের হাইপারটেনশন এর প্রবণতা কমে যায়। ছোলায় অনেক ভাল পরিমাণ ফলিক এসিড থাকে তাই ছোলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয় । এছাড়া ও ছোলা বয়সসন্ধি পরবর্তীকালে মেয়েদের হার্ট ভাল রাখতেও সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ এলার্জি দূর করার উপায় এবং দাম সহ এলার্জির ঔষধের নাম।
রক্ত চলাচলঃ
যারা প্রতিদিন ২/৩ কাপ ছোলা, শিম তার সাথে মটর খায় তাদের পায়ের আর্টারিতে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। আবার ছোলায় অবস্থিত আইসোফ্লাভন ইস্কেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আর্টারির কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
ক্যান্সার রোধেঃ
গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, যে যত বেশি পরিমানে ফলিক এসিড জাতীয় খাবারের সাথে খাবে। সেইসব মেয়েরা কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টাল ক্যান্সার এর ঝুঁকি থেকে নিজিদেরকে মুক্ত রাখতে পারবে। আবার ফলিক এসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে এ্যজমার প্রকোপও অনেকটা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে । তাই নিয়মিত ছোলা খাবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
রমজানে ইফতারে ছোলাঃ
রমজান মাসে ইফতারের অনেক খাবারের মধ্যে একটি হলো ছোলা । বিভিন্ন দেশে ছোলার ডাল বিভিন্ন ভাবে খেয়ে থাকে। ছোলা আমাদের দেহকে দৃঢ় ও শক্তিশালী করে। হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে, এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । ছোলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম।
কোলেস্টেরলঃ
ছোলা শরীরের অপ্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল গুলো কমিয়ে দেয়। ছোলাতে ফ্যাট ও তেলের বেশির ভাগ পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। যা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর না । প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়া ও ছোলাতে আরও আছে অনেক ভিটামিন এবং খনিজ লবণ।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ
ছোলাতে খাদ্য-আঁশ আছে অনেক । এই আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ সারাতে সাহায্য করে। সাধারণত খাবারের আঁশ হজম হয় না। তাই এভাবেই খাদ্যনালী অতিক্রম করতে থাকে। এর ফলে পায়খানার পরিমাণ বাড়ে ও পায়খানা নরম থাকে।
ডায়াবেটিসে উপকারীঃ
প্রায় ১০০ গ্রাম ছোলায় আছে ২০ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন, ৭০ গ্রাম শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট এবং ৬ গ্রাম ফ্যাট বা তেল ইত্যাদি । ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইডেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেকটাই কম । তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এই ছোলার শর্করা খুব ভাল। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১১ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন এ ২০০ মাইক্রোগ্রাম। তাছাড়া আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। যা সব আমাদের সবটুকু শরীরের উপকারে আসে।
রক্তের চর্বি কমায়ঃ
ছোলাতে আছে ফ্যাটের বেশিরভাগই পলি আনস্যাচুয়েটেড। এই ফ্যাট আমাদের শরীরের জন্য মোটেই ক্ষতিকর নয় বরং রক্তের চর্বি কমাতে সাহায্য করে ।
অস্থির ভাব দূর করেঃ
ছোলাতে আছে শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কম থাকার কারনে, তা শরীরে প্রবেশ করার পর অস্থির ভাব দূর হয়ে যায় ।
রোগ প্রতিরোধ করেঃ
সকালে কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে তা কাঁচা আদার সাথে মিশিয়ে খেলে শরীরে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের চাহিদা ও পূরণ হয়। আমিষ মানুষের শরীরকে আরো শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায়। অ্যান্টিবায়োটিক হলো যে কোনো অসুখের জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
জ্বালাপোড়া দূর করেঃ
ছোলাতে সালফার নামক খাদ্য উপাদান থাকে । সালফার মাথা গরম হয়ে যাওয়া এবং হাত-পায়ের তলায় জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।
মেরুদণ্ডের ব্যথা দূর করেঃ
ছোলাতে আছে ভিটামিন ‘বি’ পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে । ভিটামিন ‘বি’ হলো মেরুদণ্ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং , স্নায়ুর দুর্বলতা কমায়। ছোলা হলো অত্যন্ত পুষ্টিকর। ছোলা হলো আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। এতে আছে আমিষ মাংস বা মাছের পরিমাণের প্রায় সমান থাকে । খাদ্যতালিকায় ছোলা থাকলে মাছ মাংসের প্রয়োজন আর হয় না । ছোলা খাওয়ার ফলে ত্বকে আনে মসৃণতা। কাঁচা ছোলা হলে খুব উপকারী। তবে মাথায় রখতে হবে যে,ছোলার ডালের তৈরি যেকোনো ভাজা-পোড়া খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই আমাদের জন্য ভালো।
কাঁচা ছোলার পুষ্টিগুণ
রমজান মাসে ইফতারের সময় খাবারের মধ্যে অন্যতম হলো ছোলা বা বুট। আমাদের দেশে ছোলার ডাল অনেক ভাবেই খাওয়া হয়।
যেমন, রান্না করে মুড়ির সাথে, কাচাঁ অথবা ডাল হিসেবে। বাজারে ছোলা তেলে ভেজেও বিক্রি করে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি পুষ্টি আছে কাঁচা ছোলাতে।
সাধারণত পানিতে ছোলা ভিজিয়ে তার খোসা ফেলে তার সাথে কাঁচা আদা কুচি দিয়ে খেলে শরীরের জোগাবে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি। যা আমাদের শরীরের জন্য উপকার।
এছাড়া ও যেসব মোটা ব্যক্তি বা উচ্চ রক্তচাপ আছে এমন মানুষ তারা কাঁচা ছোলা খেতে পারেন।। তাদের জন্য অনেক তেল, মসলা দেওয়া ছোলা হলো বলতে গেলে ঝুঁকিপূর্ণ
আবার যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যদি থাকে তাহলে রান্না করা ছোলা খেতে পারেন তবে তা নির্দিষ্ট পরিমাণে কিন্তু বেশি না। অনেকেই আছে খোসাসহ ছোলা খেতে পারেন না, তারা চাইলে খোসা ছাড়িয়ে খেতে পারেন। কাঁচা৷ ছোলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষ।
অনেকেই হয়তো জানে না যে, ছোলার খোসাতে আছে ফাইবার। ফাইবার জাতীয় খাবার রক্তে চিনির মাত্রা কমায় । এতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম। তবে যাদের
কিডনির সমস্যা আছে যেমন (ডায়ালাইসিস চলছে, রক্তে ক্রিয়েটিনিন, ইউরিক এসিড এবং ইউরিয়ার পরিমাণ বেশি) তারা অবশ্যই চিকিৎসক এর পরামর্শ ছাড়া ছোলা খাবেন না।
আসলে যেকোনো ডালই পটাসিয়াম থাকে, যা আমাদের রক্তে পটাশিয়াম এর পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। হাই ব্লাডপ্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ এর রোগীরা সীমিত পরিমাণে ছোলা খেতে পারেন।
আবার যেসব বাড়ন্ত শিশু আছে তাদের দাঁত, হাড়, নখ, চুল, ত্বক এর পুষ্টির জন্য কাঁচা বা সিদ্ধ ছোলা অনেক উপকারি। তবে ছোটদের হজম শক্তি বড়দের তুলনায় অনেক দূর্বল থাকে। তাই শিশুদের জন্য সিদ্ধ বুট অনেক উপকারি।
আবার গর্ভবতী নারীদের জন্য ও ছোলা অনেক উপকারি । মায়ের পেটে থাকাকালীন সময় থেকেই শিশুর শারিরীক গঠনের জন্য আমিষ অপরিহার্য উপাদান।
তবে মাথায় রাখতে হবে, যেসব গর্ভবতী নারীদের উচ্চ রক্তচাপ, কিডনীর জটিলতা, উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড এর সমস্যা আছে , তারা চিকিৎসক এর পরামর্শ ছাড়া ছোলা খাবেন না।
এতে করে বেশি পুষ্টির আশায় অধিক ছোলা খেলে তা বিপরীত হবে। তাই বয়স এবং উচ্চতা বেশি ওজন থাকলে ছোলা কম খাওয়াই ভালো।
এখনতো করোনা মহামারী। করোনা মহামারীর জন্য অনেক যায়গায় লকডাউন থাকে। তাই এই সময়ে হাঁটাচলার অভাবে অনেকেরি ওজন বেড়ে গেছে। তাদের ছোলা না খাওয়াই ভালো। তাদের কাঁচা বা সিদ্ধ ছোলা এর পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকার ফল বা সালাদ বে মনে করি।
এছাড়া কাঁচা বা সিদ্ধ ছোলা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তবে করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে কার্যকারি কিনা তা এখানে প্রমানিত না।
ছোলা কারা খাবেন?
প্রথম কথা হলো ছোলা থেকে বড় বা ছোট সব পুষ্টিই পাওয়া যায়।
ছোলা আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি ডাল বা বুট । শুধুমাত্র যে রোজাই এই ডাল খাওয়া হয় তা কিন্তু ন। আজকাল সবাই প্রায় সব সময় ছোলা খেয়ে থাকে । ছোলাতে অনেক পুষ্টি থাকে।যা প্রোটিন গ্রুপের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এটি সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন হিসেবে ও পরিচিত। ছোলা শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে থাকে।
অনেক সময় দেখা যায় যে অনেক মানুষ ছোলা না ভিজিয়ে তারাতাড়ি সিদ্ধ করে খেয়া, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। মনে রাখতে হবে , ছোলাকে অবশ্যই সারা রাত ভিজিয়ে রেখে খেতে হবে ।যদি সেটি সম্ভব না হয় অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা ছোলা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে করে ছোলার বাহিরের কেমিকেল এবং ফাইটিংসগুলো চলে যাবে।
আবার রোজা ছাড়া যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাঁরা ছোলা একটু মিল হিসেবে খেতে পারেন। আবার যদি টক দই এর সাথে মিলিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে তো৷ ফাস্ট ক্লাস এবং সেকেন্ড ক্লাস দুটো প্রোটিনই পেয়ে যাবেন।
আরো পড়ুনঃ কিডনি ভাল রাখতে যেসব খাবার খাবেন। কিডনি ভাল রাখার সহজ উপায়।
তাছাড়া যাঁরা নিজেদের ওজন কমাতে চান, তাঁদের ছোলা, টক দই, সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে বিভিন্ন ডায়েটেশিয়ানরা। কারণ ছোলার আঁশ শরীরে ওজন কমাতে খুবই সাহায্য করে।
আবার প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ডাল এসব খেতে হয়। যার মধ্যে প্রাণিজ প্রোটিন ফার্স্ট ক্লাস আর সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন হিসেবে ডাক্তাররা ডাল ও বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে । যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি, তাঁদের জন্য প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা বাদ দেওয়া যাবে না। এর জন্য মাছ, মাংস কমিয়ে যদি প্রোটিনের চাহিদা ছোলা থেকে পূরণ করা যায় তাহলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে পারে।
ছোলার ছাতু বানিয়ে ও খাওয়া যায় । গ্রামাঞ্চলে অনেক সময় ছোলাকে গুঁড়ো করে ছাতু বানিয়ে থাকে । বাচ্চাদের খাবারে সাথে এই ছোলার ছাতু ব্যবহার করে থাকে। আবার ছোলা সিদ্ধ করে তার সাথে টমেটো, শসা, কাঁচামরিচ, সাথে একটু অলিভঅয়েল বা সরিষার তেল মিশিয়ে নিয়ে খেলে তাও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হবে।
১০০ গ্রাম ছোলার পুষ্টিগুন
অনেকেই জানতে চায় যে ১০০ গ্রাম ছোলায় কতটুকু পুষ্টিগুন রয়েছে? নিচে তুলে ধরা হলঃ ১০০ গ্রাম কাঁচা ছোলাতে প্রায়—
- ১৮ গ্রাম আমিষ,
- ৬৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,
- ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম,
- ১৯২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘এ’,
- প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১ ও বি-২
- ফ্যাট থাকে মাত্র ৫ গ্রাম।
এছাড়াও ছোলা বুটে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, খনিজ লবণ, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস ইত্যাদি উপাদান রয়েছে ।
সকালে খালি পেটে ছোলা খাওয়ার নিয়ম
কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম হল সকালে খালি পেটে খাওয়া। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে কোন একটি গ্লাস বা পাত্রে কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সকালে খালি পেটে খেয়েনিন।
প্রতিদিন কতটুকু ছোলা খাওয়া উচিত
প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ গ্রাম ছোলা খেতে পারেন। অতিরিক্ত বেশি খাবেন না। অতিরিক্ত খেলে আবার সমস্যা হতে পারে। একজন সুস্থ সাভাবিক মানুষ দৈনিক ২০ থেকে ২৫ গ্রাম ছোলা-ই যথেষ্ট। তবে সেটা যদি সিদ্ধ করা বা রান্না করা হয় তাহলে আরো বেশি খেতে পারবেন।
কাঁচা ছোলার অপকারিতা
কাঁচা ছোলা এর অনেক উপকার থাকলে ও কিছু অপকারি দিক রয়েছে। যেমন আমাদের মধ্যে প্রায় অনেকেই আছেন কাঁচা ছোলা ভেঁজে খেতে খুব পছন্দ করি। কিন্তু এটা একেবারেই সঠিক হবে না । যাদের বমির সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য কাঁচা ছোলা না খাওয়াই ভালো কেননা পরে দেখা যাবে বমির জন্য শরির আরো দূর্বল হয়ে পরবে। কাঁচা ছোলা খেলে অনেকেরই ওজন বৃদ্ধি পায়, মোটা হয়ে যায় বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা সকালে খালি পেটে কাঁচা ছোলা খেতে পারেন। কিন্তু কোনোভাবেই কাঁচা ছোলা ভেঁজে খাবেন না এতে ক্ষতি হতে পারে।
যাদের ওজন বেশি তারা এ ধরণের ছোলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বা অতিরিক্ত চর্বি জনিত সমস্যা হতে পারে । কারণ অতিরিক্ত তেল মসলা তাদের জন্য খুবই ক্ষতিকারক হবে । হজম করতে না পারলেও কাঁচা ছোলা খাবেন না। যাদের হজম শক্তি কম থাকে, তারা কাঁচা ছোলা সহজে হজম করতে পারে না। এছাড়াও যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে যাদের রক্তের ডায়ালসিস চলছে, যাদের শরীরে কিটেনিন ও ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেশি রয়েছে তারা যেকোনো রকমের ছোলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে অন্যথায় মারাত্মক সমস্যা দরখা দিতে পারে।
ছোলার দাম ২০২২
ছোলার দাম বর্তমান মূল্য অনুযায়ী ৭০-৮০ টাকা কেজি। প্রতিদিনই দাম বাড়ে কমে। আপনি যখন কিনবেন তখনকার দাম অনুযায়ী কিনতে হবে।
শেষ কথা
কাঁচা ছোলাতে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। প্রতিদিন সকালে নিয়মিত খালি পেটে কাঁচা ছোলা খেলে আপনার শরীর ও স্বাস্থ্য দুটাকেই সতেজ ও শক্তিশালী করে তুলবে। তবে অতিরিক্ত বেশি খাবেন না হিতে বিপরীত হতে পারে। ধন্যবাদ
Leave a Reply