মূখের দূর্গন্ধ দূর করার সেরা ১২ টি কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান
মুখের ভিতরে দূর্গন্ধ সৃষ্টি করে কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া।তাই এরা যখনই সুযোগ পায় তখনি ক্ষতি করে দাঁতের। সেই সাথে মুখের এমন দূর গন্ধ সৃষ্টি করে যে মানুষের সামনে মুখ লুকিয়ে কথা বলা তাছাড়া অন্য কোন উপায়ই থাকে না । তাহলে কিন্তু কেউ এই ব্যাকটেরিয়াদের মারে না কেন? কে বলে মারে না ?আসলে বাজারে এখন পাওয়া যায় নানা রকমের লিকুইড।যা কিনে সকাল-বিকাল কুলি করছে অনেক মানুষ এবং এর ফলও ভালোই মিলছে। তার সাথে ‘ফ্রেশ’ অনুভূতি তো আছেই । কিন্তু সমস্যাটা এই-যে এই সব লিকুইডের মূল্য অনেক বেশি তাই সবার পক্ষে
ক্রয় করা সম্ভব হতে উঠে না । যার ফলে মুখের এই দূরগন্ধ নিয়ে ঘুরে-বেরানো মানুষদের মধ্যে ৪০ শতাংশ পকেট ফাঁকা করে এর সুফল ভোগ করতে পারলে আর বাকি ৭০ শতাংশ সেই অন্ধকারে পরে রয়ে যায় ! কারন তারা এতো টাকা খরচ করতে প্রস্থুত নয়, তারা মুখের ভেতরে দূর গন্ধ সৃষ্টি করা এই ব্যাকটেরিয়াদের হাত থেকে বাঁচবে তা কী করে?
চিন্তা করার কিছু নেই ,এমন মানুষদের জন্য রয়েছে কিছু কিছু প্রকৃতিক ভাবে তৈরি করা ঔষুধ, যা কাজে লাগালে মুখের দূরগন্ধর মতো সমস্যা দূরে পালাতে আর সময় লাগে না। তাই এমন সমস্যার হাত থেকে যদি মুক্তি পেতে চান, যে যে নিয়ম গুলো আছে তা অবশ্যই মানতে হবে ! চলুন যেনে নেওয়া যাক, যে যে প্রাকৃতিক উপাদানগুলোকে কাজে লাগিয়ে মুখের গন্ধ দূর করা সম্ভব, সেগুলো হলোঃ
১/ নারকেল তেল
আসলে মাথারটা দাঁতে! একেবারেই। আসলে এই তেলটিতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান নিমেষে গন্ধ সৃষ্টি করা এই ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলতে সাহায্য করে। তাই তো যার ফলে মুখের গন্ধ দূর হতে বেশি সময় লাগে না। তাহলে প্রশ্ন হলো দাঁতের সমস্যায় নারকেল তেলকে কাজে লাগানো হবে কীভাবে? সে ক্ষেত্রে দুই চামচ নারকেল তেল মুখের ভিতরে নিয়ে ভাল ভাবে কুলি করুন। কম করে ৬-১১ মিনিট ধরে করতে হবে। এর পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলতে হবে মুখ ভালো ভাবে । এভাবে যদি প্রতিদিন কাজটি করতে পারেন, তাহলেই দেখবেন অনেক উপকার হচ্ছে এবং মুখের দুরগন্ধ আর হচ্ছে না।তাই এই নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।
২/ চারকোল
জানেন কি মুখে গন্ধ কেন হয়? কেন আবার একটু আগেই বললাম তো কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়ার কারণে! অবশ্যই! । আবার এই ব্যাকটেরিয়ারা যদি মারা যায় তাহলেই তো ভালো ! তাই ঠিক এই কাজটিই করে অ্যাকটিভেটেড চারকোল। এতে থাকে বেশ কিছু উপাদান যা জীবাণুদের কলোনিগুলোকে পুরো পুরি ভাবে ধ্বংস করে দেয়। ফলে দূরগন্ধ দূর হতে বেশি সময় লাগে না। সে ক্ষেত্রে একটি ছোট চামচের ১ চামচ অ্যাকটিভেটেড চারকোল নিয়ে তা ব্রাশে লাগিয়ে ভাল ভাবে দাঁত মাঝতে হবে, এভাবে যদি সপ্তাহে ১-২ বার করতে পারেন, তাহলে দেখবেন মুখের গন্ধ চলে গেছে।
৩/ মৌরি
মৌরি যাতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ, যা মুখের গহ্বরে তৈরি হওয়া ব্যাকটেরিয়াগুলোকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে । ফলে দুর্গন্ধে বদলে যায় নিমিশেই সুগন্ধে। যখনই মনে হবে যে মুখ থেকে গন্ধ হচ্ছে , ঠিক তখনি ১ মুঠো মৌরি মুখে নিয়ে চিবাতে থাকবেন। এমনটা করার ফলে মুখের লালার উৎপাদন বেরে যাতে থাকবে। ফলে মুখের সেই বাজে গন্ধ বের হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
৪/ বেকিং সোডা
আমাদের শরীরের ভেতরে অ্যাসিড লেভেল ঠিক রাখাতে তার মধ্যে দিয়ে মুখের যে দুর্গন্ধ হয়, দূর করতে বেকিং সোডার গুরুত্ব অপরিসীম বললেই চলে। তাহলে যদি এই ধরনের সমস্যায় আপনি যদি ভুগে থাকেন, তাহলে প্রতিদিন ২ গ্লাস পরিমান পানিতে অল্প কিছু পরিমাণে বেকিং সোডা মিশিয়ে নিয়ে সেই পানি দিয়ে মুখ ভালো ভাবে কুলকুচি করতে হবে। এতে করে দেখবেন আশা করি দারুন ফল পাবেন। সে ক্ষেত্রে বেকিং সোডা দিয়ে যদি ব্রাশ ও করেন তবে কিন্তু এই ধরনের সমস্যার থেকে মুক্তি পাবেন।
৫/ পার্সলে পাতা
পার্সলে পাতাতে রয়েছে ক্লরোপিল নামক একটি উপাদান। যা মুখের বাজে দূরগন্ধ দূর করতে সাহায্য করে থাকে । কিছু পার্সলে পাতা মুখে নিয়ে চিবিয়ে ফেলুন। যার ফল পাবেন সাথে সাথেই ।
৬ / এলাচ
৩-৪ টা এলাচ নিয়ে তা মুখের ভিতরে ফেলে দিন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দেখবেন গন্ধ একেবারে চলে গেছে ।
৭ / লেবুর রস
আসলে যদি মুখের গন্ধের কারণে কারও জীবন কষ্টময় হয়ে ওঠে, তাবে প্রতিদিন লেবুর রস পান করা একিবারে ভুলবেন না যেন । কারণ অনেক গবেষণায় প্রমান যে লেবুর ভেতরে থাকা অ্যাসিডিক কনটেন্ট,যা মুখ গহ্বরে বাসা বেঁধে থাকা জীবাণুদের মেরে ফেলতে পারে । যার কারনে খারাপ গন্ধ মুখ থেকে কমতে বেশি সময় সময় লাগে না। তাই ২ কাপ পানিতে ২-৩ চা চামচ লেবুর রস ফেলে তা পান করতে পারেন কিনবার সেই পানি দিয়ে মুখ ভালো করে কুলকুচি করে ও নিতে পারেন এবং তা পরে ফেলে দিবেন । এতে আশা করি উপকার পাবেন।
৮ / মেথি বীজ
২ চামচ মেথি বীজ নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো পানি ও এর সঙ্গে মিশিয়ে সেই পানিটাকে চুলায় গরম করুন । গরম হলে তারপর বীজগুলোকে ভালো ভাবে ছেঁকে নিয়ে সেই পানি চায়ের মতো পান করতে হবে। কিছু দিন এমন করলে দেখবেন মুখের গন্ধ কমে গেছে।
৯ / অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
প্রকৃতিক উপাদান এর ভেতরে বিদ্যমান যাতে একাধিক উপাকারি উপাদান রয়েছে। এটি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে । তারি সাথে দাঁতের উন্নতিতেও অনেক ভাবে সাহায্য করে থাকে। তাই সকালের খাবার, বিকালের খাবার এবংরাতে খাবারের৷ আগে অল্প পরিমাণে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার একটি কাচের এক গ্লাস পানিতে নিয়ে ভালো করে তা মিশিয়ে পান করতে হবে। এমন করলে যেমন ওরাল হেলথের উন্নতি ঘটবে, অন্যদিকে নানাবিধ পেটের রোগ ও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও কমে যাবে । আবার যদি এই মিশ্রনটি আপনাদের পান করতে মন না চায়,তবে তা দিয়ে গার্গেলও করে নিতে ও পারেন।
১০ / মিন্ট পাতা
মিন্ট পাতাকে প্রাকৃতিক মাউন্ট ফ্রেশনার বলা হয়ে থাকে। তাই যখন মুখে গন্ধ হবে তখনই ২-৪ টে মিন্ট পাতা মুখের ভিতরে নিয়ে চিবিয়ে ফেলবেন । তাহলেই হবে। ভালো উপকার পাবেন।
১১/ দারচিনি
আপনারা কি জানেন মুখের ভিতরে সৃষ্টি হওয়া জীবানুদের মেরে ফলতে দারচিনির কতটা উপকারি । তাই মুখ থেকে গন্ধ বের হলে ২ চামচ দারচিনির পাউডারের সাথে এবং পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে তা চুলায় গরম করে নিন। এর পর সেই পানি ভালো করে ছেঁকে নিয়ে মুখের ভিতর ধুয়ে ফেলুন । দেখবেন গন্ধ নিমিষেই চলে গেছে।
১২/ লবঙ্গ
লবঙ্গে রয়েছে অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল প্রপাটিজ। যা মুখে গন্ধ সৃষ্টি করা ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলতে সাহায্য করে । ২-৩ টা লবঙ্গ নিয়ে তা চুসতে থাকবেন । দেখবেন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মুখের দূরগন্ধ চলে গেছে।
যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে আমার দেওয়া নিয়ম গুলো একবার চেষ্টা করে অবশ্যই দেখবেন।
ধন্যবাদ,,,
Leave a Reply